বাংলাদেশে নিষিদ্ধ বই

  • আপডেটের সময়: শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • ২৪৬ সময় দেখুন

বাংলাদেশে সময়ে সময়ে অনেক বই নিষিদ্ধ বা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, রাজনৈতিক বিতর্ক, ইতিহাস বিকৃতি বা অশ্লীলতার অভিযোগে এই বই গুলি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অবিভক্ত ভারতে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পাঁচটি বই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, যার মধ্যে “বিষের বাঁশি” উল্লেখযোগ্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের লেখা নারী বইটি ১৯৯২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। নারীবাদ নিয়ে লেখা এই বইটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয় এবং বইটিকে ধর্মবিদ্বেষী বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে সরকার বইটি নিষিদ্ধ করা হয়।

বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিনের লজ্জা উপন্যাসটি ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত হয়। এই বইটি প্রকাশের ছয় মাসের মধ্যেই বাংলাদেশ সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। ভারতের বাবরি মসজিদ ভাঙার পরবর্তী হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রেক্ষাপটে এ বইটি লেখা হয়েছিল। এই লেখিকার আরেকটি আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস ক ২০০৩ সালে প্রকাশিত হয়। বইটিতে লেখক তার ব্যক্তিগত জীবনে ঘটে যাওয়া যৌন নিপীড়নের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছিলেন। এই বইটি প্রকাশের পর বিতর্কের সৃষ্টি হয় এবং সরকার বইটি নিষিদ্ধ করে।

লেখক মতিউর রহমান রেন্টুর আমার ফাঁসি চাই বইটি ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত হয়। বইটিতে ইতিহাস বিকৃতি এবং রাজনৈতিক বিতর্ক ছড়ানোর অভিযোগে সরকার বইটি নিষিদ্ধ করেছিল। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদের লেখা রেভোলিউশন, মিলিটারি পারসোনেল অ্যান্ড দ্য ওয়ার অব লিবারেশন ইন বাংলাদেশ বইটি ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে ২০২০ সালে হাইকোর্ট বইটি নিষিদ্ধ ও বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয়। বাংলাদেশে নিষিদ্ধ বইয়ের সংখ্যা বেশি নয়, তবে সময়ে সময়ে বিভিন্ন বই ধর্মীয়, রাজনৈতিক বা সামাজিক কারণে নিষিদ্ধ বা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে যা দুঃখ জনক। কবিতা লেখার জন্য ১৯৭৪ জেলে যেতে হয় কবি দাউদ হায়দারকে। “কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়” কবিতার জন্য কবি জেলে গিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ অনা হয়েছিলো। কবি জার্মানিতে নির্বাসিত আছেন। বাংলাদেশে মুক্তচিন্তা ও সৃজনশীলতার বিকাশ হবে এবং বই নিষিদ্ধ হবে না এই স্বপ্নে আমরা আগামীর পথে এগিয়ে যাবো।

মোহাম্মদ মেহেদী হাসান, লেখক ও সমাজসেবক

এই বিভাগের আরও খবর

আজকের দিন-তারিখ

  • শুক্রবার (সন্ধ্যা ৬:৪১)