বাংলাদেশে নারী অধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নারী অধিকার উন্নয়নের ক্ষেত্রে বেশ কিছু অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, তবে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। বাংলাদেশ সরকার নারীর অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করেছে, যেমন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০, দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা বাতিল (ব্যভিচার আইন।
নারী শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে এবং সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী নারীদের জন্য বিভিন্ন সহায়তা কর্মসূচি চালু হয়েছে। তবে নারী ব্যাবসায়ীরা এখনও হয়রানির শিকার হচ্ছে। বনাগ্লাদেশের রাজনীতিতে নারীরা অবদান রাখছে, জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন রয়েছে এবং স্থানীয় সরকারে নারীদের সরাসরি অংশগ্রহণ বাড়ছে। জাতীয় অর্থনীতিতে নারীদের অবদান ক্রমাগতভাবে বাড়ছে, গার্মেন্টস শিল্পে নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ রয়েছে। ক্ষুদ্র ঋণ ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধার মাধ্যমে নারীদের স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের নারীরা অন্য নারীদের জন্য স্বনির্ভরতার উদহারণ।
বাংলাদেশের নারীরা এখনো নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হচ্ছে। তাঁরা গার্হস্থ্য নির্যাতন, যৌন হয়রানি ও বাল্যবিবাহর শিকার হচ্ছে। ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া বাংলাদেশে ধীরগতির। সমাজের নারীদের উপর রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গি এখনো বিদ্যমান। অনেক ক্ষেত্রে নারীরা এখনো পারিবারিক ও সামাজিক বাধার সম্মুখীন হন। কর্মক্ষেত্রে নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ বিদ্যমান রয়েছে। উত্তরাধিকার আইন ও পারিবারিক আইন অনেক ক্ষেত্রে নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক। চাকরিতে বেতন ও সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে পুরুষের তুলনায় নারীরা পিছিয়ে।
কিছু ক্ষেত্রে মাতৃত্বকালীন ছুটির পর নারীদের চাকরি ফিরে পেতে সমস্যা হয়।
বাংলাদেশে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বেশ অগ্রগতি হয়েছে, তবে পূর্ণ সমতা অর্জনের জন্য এখনো অনেক কাজ বাকি। নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আইন সংস্কার করা প্রয়োজন। শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা করতে হবে। নারীদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
রাজনীতি ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ আরো বাড়ানো প্রয়োজন।
নিজস্ব প্রতিবেদক