বাংলাদেশের কবি দাউদ হায়দার জার্মানিতে মারা গেছেন। কবি দাউদ হায়দারের জন্ম ১৯৫২ সালে বাংলাদেশের পাবনার দোহারপাড়া গ্রামে। জার্মানিতে বসবাসরত কবি বার্লিনে শ্যোনেবের্গ ক্লিনিকে মারা গেছেন। তিনি বার্লিনের রাইনিকেডর্ফ এলাকায় একাকী বসবাস করতেন।
কিছুটা সুস্থ হয় উঠলে দাউদ হায়দারকে গত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে বার্লিনের শ্যোনেবের্গ ক্লিনিকে স্থানান্তরিত করা হয়। গতকাল শনিবার রাত নয়টার দিকে এই ক্লিনিকেই তিনি মারা যান। দাউদ হায়দারের মারা যাওয়ার পরপরই শ্যোনেবের্গ ক্লিনিকের চিকিৎসক কবির এই মৃত্যুসংবাদ মাইন চৌধুরীকে ফোন করে জানান।
সত্তরের দশকের শুরুর দিকে দাউদ হায়দার দৈনিক সংবাদের সাহিত্য পাতার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সংবাদ পত্রিকার সাহিত্য পাতায় ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’ নামের একটি কবিতা লেখার ‘অপরাধে’ ১৯৭৪ সালের ১১ মার্চ গ্রেপ্তার হন। তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জন্য মামলা করা হয়। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের ছাত্র ছিলেন।
পরে ১৯৭৪ সালের ২১ মে দাউদ হায়দারকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়। প্রথম তিনি ১৩ বছর কলকাতায় ছিলেন। পরে জার্মানির নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের সহযোগিতায় ১৯৮৬ সালের ২২ জুলাই জার্মানি এসে পৌঁছান। তখন থেকেই তিনি জার্মানির বার্লিন শহরে বসবাস করে আসছিলেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর দাউদ হায়দারই প্রথম লেখক, যাঁকে লেখালেখির কারণে নির্বাসনে যেতে হয়। ৫০ বছর ধরে কবি দাউদ হায়দার নির্বাসনে ছিলেন। এই সময়ে তিনি আর কখনোই দেশে যেতে পারেননি। বাংলাদেশের কোনো সরকার এই কবিকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনো উদ্যোগ নেয়নি।